ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ , ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিকাব পরায় মুসলিম ছাত্রীকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ২৭-০৬-২০২৫ ০১:৪৬:২৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৭-০৬-২০২৫ ০১:৪৬:২৫ অপরাহ্ন
নিকাব পরায় মুসলিম ছাত্রীকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ​প্রতীকী ছবি
ইসরায়েলে নিকাব পরার কারণে এক মুসলিম ছাত্রীকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির বার-ইলান বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও বৈষম্য নিয়ে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ওয়াই নেট নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্রীটির বাড়ি ইসরায়েলের উত্তরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর অধ্যাপক আমনন আলবেক এক চিঠিতে জানান, ছাত্রীটি ক্লাস এবং ক্যাম্পাসে নিকাব পরতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তবে বর্ষার শুরুতেই তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ মুখ ঢেকে রাখা অনুমোদিত নয়।

চিঠিতে অধ্যাপক আলবেক লেখেন, আমরা প্রত্যেকের ধর্মচর্চার অধিকারকে সম্মান করি এবং আপনার ক্ষেত্রেও তাই করেছি। কিন্তু আমরা শুরু থেকেই বুঝিয়ে দিয়েছি, হিজাব গ্রহণযোগ্য হলেও নিকাব নয়। বিশেষ করে অপটোমেট্রির মতো হাতে-কলমে শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মুখ দৃশ্যমান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওই ছাত্রী। তিনি বলেন, আমি মর্মাহত। আমি একজন ধর্মপরায়ণ নারী। নিকাব আমার বিশ্বাসের অঙ্গ। ক্যাম্পাসের সবাই আমাকে গ্রহণ করেছে, শুধুমাত্র প্রশাসন আমাকে নিশানা করছে। এটা শুধু আমাকে নয়, বরং আমার ধর্ম ও মুসলিমদের অপমান।

তিনি আরও বলেন, নিকাব আমার জন্য স্টাইল নয়, বরং ধর্মীয় শিক্ষা। অপরিচিত পুরুষদের সামনে মুখ খোলা আমার বিশ্বাসের গুরুতর লঙ্ঘন। আমি ইতোমধ্যে এক সেমিস্টার ক্লাস করেছি, উপস্থাপনা দিয়েছি এবং ইহুদি সহপাঠীদের কাছ থেকেও প্রশংসা পেয়েছি। নিকাব কথোপকথনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে—এমন দাবি ভিত্তিহীন।

ছাত্রীটি অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের মূল আইন—‘বেসিক ল’ (মানব মর্যাদা ও স্বাধীনতা) লঙ্ঘন করছে। এই আইনে ব্যক্তিস্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, দেশটির সুপ্রিম কোর্টের ‘মিলার মামলা’তে ধর্মচর্চার স্বাধীনতাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং ‘সমান শিক্ষা সুযোগ আইন’ অনুযায়ী ধর্মীয় কারণে কাউকে বৈষম্যের শিকার করা যায় না।

তিনি বলেন, আমি আমার বিশ্বাসের সঙ্গে আপস করব না। যদি সমান ও সম্মানজনক আচরণ না পাই, তাহলে আমি আইনি পদক্ষেপ, মানবাধিকার সংস্থার সহায়তা এবং দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের কাছে যাওয়ার কথা ভাবব।

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা সকল ধর্ম ও সংস্কৃতিকে সম্মান করি এবং প্রতিটি শিক্ষার্থীর সঙ্গেই সেই আচরণ করি। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালার আওতায় ক্যাম্পাসে, শ্রেণিকক্ষে এবং শিক্ষাপ্রাঙ্গণে মুখ দৃশ্যমান থাকা বাধ্যতামূলক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, এই নীতিমালা শিক্ষার মান, নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক কারণে প্রণীত। এতে শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষার্থীর উন্মুক্ত যোগাযোগ, ব্যক্তিগত শনাক্তকরণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। সেকারণে মুখ সম্পূর্ণভাবে ঢেকে রাখা অবস্থায় শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি বা ক্যাম্পাসে অবস্থান অনুমোদনযোগ্য নয়।

বাংলা স্কুপ/ডেস্ক/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ